রয়্যাল এনফিল্ড বাজারে আসছে সোমবার, থাকছে যেসব ফিচার
দিনাজপুর টিভি ডেস্ক
আপলোড সময় :
২০-১০-২০২৪ ০৪:২৬:১৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২০-১০-২০২৪ ০৪:২৬:১৪ অপরাহ্ন
অবশেষে অনুমোদনের দীর্ঘ এক বছর পর দেশের বাজারে আসছে ‘রয়্যাল এনফিল্ড’। সোমবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশে লঞ্চ হতে যাচ্ছে চার মডেলের ৩৫০ সিসির বাইক। বাংলাদেশে রয়্যাল এনফিল্ডের একমাত্র প্রস্তুতকারক ও পরিবেশক ইফাদ মোটরস বাজারে নিয়ে আসছে এই আইকনিক ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল।
নতুন মডেলের নাম ও দামের বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানায়নি কোম্পানিটি। তবে অভ্যন্তরীণ সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার দুপুরে চারটি ৩৫০ সিসির মডেল—হান্টার, বুলেট, ক্লাসিক ও মিটিয়র—অনলাইনে লঞ্চ করা হবে। পরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে রয়্যাল এনফিল্ডের ফ্ল্যাগশিপ শোরুমে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মডেলগুলো উন্মোচিত হবে।
টেস্ট রাইডাররা বলছেন, নতুন প্রজন্মের রয়্যাল এনফিল্ড মডেলগুলো ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি আরও উন্নত পারফরম্যান্স নিশ্চিত করবে। মডেলগুলোর দাম কত হবে, তা এখনো জানানো না হলেও ধারণা হচ্ছে, চারটি মডেলের মধ্যে হান্টার ৩৫০-এর দাম হতে পারে সবচেয়ে কম, প্রায় ৪ লাখ টাকা। বুলেট, ক্লাসিক ও মিটিয়র মডেলগুলোর দাম ক্রমান্বয়ে বেশি রাখা হবে। এই চারটি মডেলে থাকবে উন্নত ফুয়েল ইনজেকশন সিস্টেম এবং পরিমার্জিত সিঙ্গেল-সিলিন্ডার 'জে' (J) সিরিজের ইঞ্জিন। এছাড়া রং ও ব্রেকিং সিস্টেমে ওপর ভিত্তি করে আলাদা ভেরিয়েন্টও থাকবে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মোটরসাইকেল উৎপাদন কারখানা তৈরি করেছে ইফাদ মোটরস। দীর্ঘ দুই দশক ইঞ্জিন সক্ষমতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে রাখার পর ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সরকার স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ৩৭৫ সিসি পর্যন্ত ইঞ্জিন সক্ষমতার মোটরসাইকেলের অনুমোদন দেয়।
একনজরে রয়্যাল এনফিল্ড:
রয়্যাল এনফিল্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনের যাত্রা শুরু ১২৩ বছর আগে, ইংল্যান্ডে। মূলত সামরিক ব্যবহারের জন্য মোটরসাইকেলটির উৎপাদন শুরু হয়। এটি এখনো চালু থাকা বিশ্বের প্রাচীনতম টু-হুইলার ব্র্যান্ড।
১৯৫০-এর দশকে রয়্যাল এনফিল্ড ভারতের মাদ্রাজ মোটরসের সঙ্গে যৌথভাবে 'এনফিল্ড ইন্ডিয়া' গঠন করে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য বুলেট ৩৫০ মোটরসাইকেল সংযোজন শুরু করে। পরের কয়েক দশকে রয়্যাল এনফিল্ড ভারতীয় মোটরসাইক্লিংয়ের প্রতীক হয়ে ওঠে। যুক্তরাজ্যে ১৯৭০ সালে এর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে রয়্যাল এনফিল্ড ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আইশার মোটরসের শতভাগ নিয়ন্ত্রণাধীন। ৫০টিরও বেশি দেশে বিক্রি হয় রয়্যাল এনফিল্ড। ২০২৩ সালে কোম্পানিটির বিক্রি রেকর্ড ৯ লাখ ইউনিট পেরিয়েছে। ২০২৩ সালে ব্রাজিল, থাইল্যান্ড, কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনার পর নেপালে পঞ্চম সংযোজন কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছে রয়্যাল এনফিল্ড।
চলুন জেনে নেওয়া যাক বাইকগুলোর ফিচার সম্পর্কে—
রয়্যাল এনফিল্ড হান্টার ৩৫০: রয়্যাল এনফিল্ড পরিবারের সবচেয়ে আধুনিক সদস্য হচ্ছে হান্টার। অবশ্য ক্লাসিক মডেলের ধারা অব্যাহত রেখে এর একক সিলিন্ডার ও ৩৪৯ সিসির ইঞ্জিনের ক্ষমতা একই রাখা হয়েছে। অর্থাৎ ৬,১০০ আরপিএমে ১৪.৮৭ কিলোওয়াট এবং চার হাজার আরপিএমে ২৭ এনএম টর্ক। সামগ্রিক নকশা অনুসারে এই সিরিজ শহুরে পরিবেশের জন্য উপযুক্ত। স্টিলের ফ্রেমটি ন্যাভিগেশন এবং চালক ও যাত্রী দুজনের ফুটপেগের সহায়ক। এখানেও আছে সামনের সাসপেনশনে টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং পেছনের সাসপেনশনে টুইন সাইড সুইং আর্ম। হান্টার-৩৫০’ এর আকার ও সর্বোচ্চ ১৮১ কেজি ওজন শামাল দিতে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মোটরসাইকেল চালককে হিমশিম খেতে হয় না। ৩১.১ ইঞ্চি বা ৭৯০ মিলিমিটারের উচ্চতায় বসার জায়গাটি যেকোনো চালক ও যাত্রীর জন্য স্বাভাবিক। তাছাড়া চলন্ত অবস্থায় সুরক্ষার জন্য সামনে এবং পিছনে এবিসসহ হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক তো থাকছেই। বাইকটির যন্ত্রাদি ডিজিটাল হওয়ায় পাওয়ার আউটলেট, হার্ডসাইড কেস এবং স্টোরেজ কভারের সুবিধা আছে। অ্যালুমিনিয়ামের চাকাগুলোতেও লাগানো আছে টিউবলেস টায়ার।
রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ৩৫০: প্রতিষ্ঠানটির ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির এক সঙ্গত সংমিশ্রণ রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ৩৫০। বাতাস চলাচলের মাধ্যমে শীতলীকরণ প্রক্রিয়া সমৃদ্ধ একক সিলিন্ডার ও ৩৪৯ সিসির ইঞ্জিন একটি আদর্শ মোটরসাইকেল হিসেবে মডেলটিকে ন্যায্যতা দেয়। ৬,১০০ আরপিএম (ইভোলিউশন পার মিনিট)-এর সঙ্গে রয়েছে ২০.২ বিএইচপির (ব্রেক হর্সপাওয়ার) হর্সপাওয়ার এবং চার হাজার আরপিএমের সঙ্গে প্রতি ফুট দূরত্বে ১৯ পাউন্ডের টর্ক। তাই শহুরে যানজট বা খোলা-রাস্তা উভয় ক্ষেত্রেই চালনায় ভারসাম্য নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। এনফিল্ড ঐতিহ্যের সমগ্র নান্দনিকতার ছোঁয়া পড়েছে নকশায়। স্টিলের ফ্রেমটি চালক ও যাত্রী উভয়ের জন্যই স্বাভাবিক হ্যান্ড গ্রিপ্স, হ্যান্ডেলবার ও সামঞ্জস্যপূর্ণ ফুট পেগ নিশ্চিত করে। বাইক চড়ার মুহূর্তগুলোকে আরামদায়ক করার জন্য সামনের সাসপেনশনে রয়েছে ৪১ মিলিমিটার টেলিস্কোপিক ফর্ক আর পেছনেরটাতে একটি টুইন সাইড সুইং আর্ম।
যথাযথ নিরাপত্তার স্বার্থে এবিএস (অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম) হিসেবে কাজ করবে সামনে এবং পিছনে উভয় দিকের হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক। সতর্ক সংকেত দেওয়ার জন্য যন্ত্রাংশ প্যানেলে রয়েছে চিরাচরিত স্পিডোমিটার ও একটি ফুয়েল লেভেল লাইট। এছাড়াও সঙ্গে বহন করার জন্য আছে হার্ডসাইড কেস, পেছনের র্যাক ও ব্যাগ লাইনারসহ আনুষঙ্গিক নানাবিধ সংযোজনের ব্যবস্থা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dinajpur TV
কমেন্ট বক্স